Homeবাংলা শাখাজাতীয় নিরাপত্তায় প্রাধিকার কোনটি : মানুষ না সেতু

জাতীয় নিরাপত্তায় প্রাধিকার কোনটি : মানুষ না সেতু

একটি সেতু ধসে পড়লে তা তৈরি করা যায়, একটি মানুষ চলে গেলে তাকে সৃষ্টি করা যায় না। সোভিয়েত ইউনিয়নের একনায়ক স্ট্যালিন জমানার একটি কাহিনী। কোনো একটি ট্রাক্টর কারখানার ম্যানেজারকে স্ট্যালিন নির্দেশ দিয়েছিলেন মাসে ১০ হাজার ট্রাক্টর তৈরি করতে। এভাবে বহু কারখানার কর্তৃপক্ষকে স্ট্যালিন নিজে ফোন করে উৎপাদন বাড়ানোর কঠোর নির্দেশ দিতেন। সব টুকে রাখতেন নোটবুকে। এসব করে নিজেকে একজন কঠোর প্রশাসক ভাবতে মজা পেতেন স্ট্যালিন, যা সব একনায়কই করে থাকেন।

সবাই জানত স্ট্যালিনের ওই নির্দেশের মানে কি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হলে কপালে কী হতে পারে তাও অনেকে অনুমান করতেন, ভয়াবহ সব কাহিনী শুনতেন। ট্রাক্টর কারখানার ম্যানেজার তার ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে বৈঠক করে দেখতে পেলেন যে, সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করেও তারা হয়তো ৯ হাজার ট্রাক্টর বানাতে পারবেন। কিন্তু স্ট্যালিন ও তার পেটোয়া গোয়েন্দা সংস্থা এনকেভিডির খুনি, নিপীড়ক কর্তাদের কথা মাথায় রেখে তিনি সবাইকে ডেকে পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিলেন। জান বাঁচানোর তাগিদে ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিক, সাধারণ শ্রমিক সবাই রাত-দিন পরিশ্রম করে গেলেন। বলতে গেলে ২৪ ঘণ্টাই কারখানা সচল রাখা হলো।

মাস শেষে নির্দিষ্ট দিন স্ট্যালিন রাতে ফোন করলেন ম্যানেজারের বাসার টেলিফোনে। ক’টি ট্রাক্টর বানানো হয়েছে? ৯ হাজার ৯০০টি। ১০০টি কম কেন? রাত-দিন খেটেও এর চেয়ে আর বেশি বানাতে পারিনি। আর যদি ক’টি দিন সময় দেন তবে ১০০টি বানানো যাবে, কাতর কণ্ঠে উত্তর ম্যানেজারের। এসব কথায় মন গলার মতো মানুষ স্ট্যালিন নন। তার মনে স্বপ্ন দ্রুত উন্নতি, বিশ্বে আমেরিকার সমকক্ষ হওয়া। রুক্ষ স্বরে তিনি ম্যানেজারকে জানালেন, তুমি ব্যর্থ হয়েছ; সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে তুমি বিশ্বাসঘাতকতা করেছ, তোমার মতো অকর্মণ্য মানুষ কখনো কমিউনিস্ট হতে পারে না। আমি গোয়েন্দা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছি তোমাকে তোমার পরিবারসহ হত্যা করতে। তোমাদের কোনো প্রয়োজন নেই আমাদের মহান দেশে। ওরা এখন তোমার বাড়ি ঘিরে আছে। ম্যানেজার জানালার পর্দা সরিয়ে দেখেন অস্ত্র হাতে এনকেভিডির গোয়েন্দারা ঠিকই বাড়ি ঘিরে রেখেছে।

স্ট্যালিন ফোন ছেড়ে দেয়ার পর মুহূর্তেই ঝড়ের গতিতে দরজা ভেঙে গোয়েন্দারা বাড়িতে প্রবেশ করল। ম্যানেজারসহ তার স্ত্রী ও দেড় বছরের শিশুকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো। শহর থেকে একটু দূরে জঙ্গলের পাশে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হলো তাদের, লাশ ফেলে রাখা হলো পাশ দিয়ে যাওয়া সড়কের ওপর। সবাই জানত, ওভাবেই হত্যা করা হয় ‘উন্নতিতে বাধা প্রদানকারী’ ‘অকর্মণ্য’ নাগরিকদের। স্ট্যালিন এভাবে নিজ দেশের প্রায় সাড়ে চার কোটি নিরীহ নাগরিককে বিভিন্ন কথিত অভিযোগে হত্যা করেছিলেন। মানব ইতিহাসে কোনো একক ব্যক্তির হাতে এটিই সবচেয়ে বড় হত্যাকাণ্ড। এর বাইরে পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, চেকোশ্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরির মতো দেশে চালানো গোপন ও প্রকাশ্য হত্যাযজ্ঞ তো রয়েছেই। এগুলো করে স্ট্যালিন মজা পেতেন। স্যাডিস্টিক মজা। নেশা ছিল অগ্রগতির, শ্রমিক রাজের অগ্রগতির। তাতে কতজন মরল, তা বিবেচ্য ছিল না।

গত ৩০ আগস্ট ছিল আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস। বাংলাদেশে হারিয়ে যাওয়া, গুম হয়ে যাওয়া অগণিত মানুষের পরিবারের সদস্যরা সে দিন ঢাকায় সমবেত হয়েছিলেন। ছোট্ট শিশুরা সে দিন চোখের পানি ফেলে আকুতি জানিয়েছে, ‘আমার আব্বুকে ফিরিয়ে দাও’। স্ত্রী যেকোনো মূল্যের বিনিময়ে করজোড়ে অনুনয় করেছে- ‘আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দাও’।

যাদের মনে ফুর্তি আছে, যাদের আয় বেড়েছে আশাতিরিক্ত, যেসব রাখাল বালক মাত্র কয়েক বছরে বিশাল ‘অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব’ হয়ে উঠেছেন, যেসব আমলার বেতনভাতা বেড়েছে কল্পনারও অতীত, যেসব রাজনৈতিক নেতাকর্মীর গ্রামের বাড়িতে উঠেছে প্রাসাদ, যেসব গেয়ো অদেখলারা জীবনে প্রথম একটি ফ্লাইওভার দেখে গদগদ, তাদের এসব কান্নায় কি-ই-বা যায়-আসে? তারা কাঁদবে কেন? তাদের মন ব্যথিত হবে কেন? তাদের কিসের দায়? তারা তো সব পেয়েই গেছে, আরো আছে পাইপলাইনে। ওই যে মেট্রোরেল নাকি, তা নিয়ে তাদের তো এখন লাফানোর সময়। এসব কান্না করবে তারাই, যারা অগ্রগতির প্রতিবন্ধক, এ দেশের জন্য যোগ্য নয়!

এ দিকে গুম দিবসের কান্নার ঠিক পরদিনই ভরা বর্ষায় একটি ফেরির মাস্তুল আঘাত করে পদ্মা সেতুর স্প্যানে। তার পরদিন মুক্তি পায় বহুল আলোচিত, সমালোচিত একজন নায়িকা কাম মডেল। মূল ধারার মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশিত সংবাদ ও মতামতের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে যেকোনো বিবেকবান মানুষকেই হতবাক হতে হবে। এর ওপর এ দেশের মানুষ কথায় কথায় নিজেদের মুসলিম পরিচয় নিয়ে গর্ব অনুভব করে, হাজার মাইল দূরে কোনো একটি গোষ্ঠী মাথায় পাগড়ি পরে দাঁড়িয়ে গেলে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয়ে গেছে বলে প্রশান্তি অনুভব করে। অথচ সেসব মানুষই যত না ব্যস্ত একজন নায়িকার হাতে মেহেদিতে লেখা বিশ্লেষণ করা নিয়ে, তার লাখো ভাগের এক ভাগও ওই পিতাহারা শিশুগুলোর ‘আমার আব্বুকে ফিরিয়ে দাও’ হাহাকার নিয়ে চিন্তিত নয়।

আবার ফেরির মাস্তুল কেন, কোন অ্যাঙ্গেলে আঘাত করল পদ্মা সেতুর স্প্যানে, কেন আঘাত করল, কে এর পেছনে, কারা উন্নয়নের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে ইত্যাকার সব কথকতা নিয়ে মহাব্যস্ত ষোলোমুখী গবেষকরা। রিটায়ার্ড আমলারা আবার এ ক্ষেত্রে বেশি নয়, হাইপার অ্যাকটিভ। তাদের পোস্টের পর পোস্টে ফেসবুক সয়লাব। কতই না চেষ্টা? যদি সংশ্লিষ্ট মহলের নজরটা পাওয়া যায়! তিনি তো বিপ্লবী জোশে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন দেশের সম্পদ রক্ষায়, ওই মহাসম্পদে একটি মাস্তুলের আঘাত নিয়ে। তার বিশ্লেষণ থেকে যদি আসলেই কোনো ষড়যন্ত্রের ক্লু পাওয়া যায়, তো আর কী চাই? কেল্লা ফতে। অবসরে প্রমোশন সম্ভব নাও হতে পারে, তবে বিশেষ নেকনজর তো কনফার্ম। সব তত্ত্ব, আর তত্ত্ব। কোথায় একটু কন্সপিরিসি পাওয়া যায়? এত বড় কথা? জাতীয় নিরাপত্তা শেষ করে দিচ্ছে যে!

এখন আবার নতুন একটা সিনড্রোমও দাঁড় হয়েছে এসব তত্তে¡র সমান্তরালে। এত দিন কোনো বাড়ি ধসে পড়লে, কোথাও আগুন লাগলে, কেউ ক্রিকেটে পাকিস্তান দলকে সমর্থন করলে, চাই কি পিআইএতে ভ্রমণ করলেও আইএসআই তকমাটা লাগিয়ে দেয়া হতো। সব অসুখের সমাধান ছিল আইএসআই! নাশকতা, জঙ্গি হামলা কোথায় ছিল না আইএসআই! বিনা পয়সায় পাক গুপ্তচর সংস্থা বোধকরি এত প্রচার আর কোথাও পায়নি। এখন ফুরুত করে আইএসআই গায়েব। তাজ্জব কি বাৎ! যাদের এত দিন দেখা যেত আইএসআই, আইএসআই করে জপমালা জপতে; এখন সেই একই শ্রেণীকে দেখছি সব কিছুতে নাকি ‘র’ এর হাত পাওয়া গেছে! নায়িকা, মডেল গ্রেফতার হয়, বলা হয় ‘র’; পদ্মা সেতুতে পাগল পাওয়া যায় তারা নাকি ‘র’; পিলারে ধাক্কা লাগে তাও নাকি ‘র’! তা হলে দাঁড়ালটা কী? বিআইডবিøউটিসির ফেরিগুলোও সরকারি, সারেংরাও সরকারি, পদ্মা সেতুটাও সরকারি। এ অবস্থায় সব জায়গায় ‘র’! এটি কি সাফল্য, না ব্যর্থতা, না হাইপ? আবার এসব চিৎকার, চেঁচামেচিতে নতুন করে জুটেছে জাতীয়তাবাদী বলে পরিচিতজনরাও। তারাও ‘র’ আবিষ্কার করে মহাখুশি। কিন্তু তাদের দৃষ্টিকেও ফাঁকি দেয় ‘আমার আব্বুকে ফিরিয়ে দাও’ বলে বুক ফাটা হাহাকার!

পদ্মা সেতু, যমুনা সেতু আমাদের দেশের অমূল্য সম্পদ। কী পয়েন্ট ইনস্টলেশন-কেপিআই, অর্থাৎ অতি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। এ জন্যই এই দু’টি সেতু এলাকায় সরকার সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। যেকোনো বাংলাদেশীর কাছেই এই দু’টি সেতু গর্বের। এগুলো আবার স্ট্র্যাটেজিক অবকাঠামোও বটে। যোগাযোগ তো বটেই সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এগুলো বিশাল গুরুত্বের দাবিদার। এগুলোর অস্তিত্ব আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এসবের নিরাপত্তা ভঙ্গ হলে সার্বিকভাবে জাতীয় নিরাপত্তাও ব্যাহত হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে কোনটার প্রাধিকার আগে? মানুষ? না অবকাঠামো?

একটি সেতুর ক্ষতি হলে তা মেরামত করা যাবে, হয়তো কিছু অর্থ খরচ হবে। এমনকি সেতুটি ধসে পড়লেও তা আবার বানানো যাবে, যেমন আমরা ১৯৭১ সালে পাক বাহিনীর দ্বারা উড়িয়ে দেয়া মেঘনা সেতু কম সময়ের মধ্যে মেরামত করেছিলাম। কিন্তু একটি মানুষ গুম হলে, খুন হলে তাকে কি আর পাওয়া যাবে? মানুষ কি রিপ্লেসেবল? মুক্তিযুদ্ধে নিহত একটি মানুষকেও তো মেরামত করা যায়নি, বানানো যায়নি। কিন্তু প্রায় প্রতিটি অবকাঠামো আমরা শুধু মেরামতই করিনি, উন্নত করেছি। অবকাঠামোর ক্ষতি একটি জড় বস্তুর চোখের পানি নয়; গুম হয়ে যাওয়া একটি পরিবারের ক্ষতি চোখের পানি- যারা মানুষ, জড় বস্তু নয়। কোনটি বড়? আমরা আছি পয়েন্ট কামানোর জন্য, দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য জড় বস্তু নিয়ে ব্যস্ততা ও উদ্বেগ দেখাতে। আমরা ওই একই পয়েন্ট হারানোর ভয়ে ‘মানুষ মানুষের জন্য’ আপ্তবাক্যটিই অস্বীকার করছি। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা, ধর্মীয় আবহ আমাদেরকে এ শিক্ষাই দিয়েছে! এটিই আমাদের নৈতিকতা একজন মুসলমান হিসেবে গর্ব করার!

ভাষা, ধর্ম ইস্যুতে বাংলাদেশের রয়েছে ইউনিক অবস্থান। এ দেশের ৯৮.৭ শতাংশ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। পৃথিবীতে কোরিয়ার পরই এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান। এ বিবেচনায় আমাদের দেশে সামাজিক যুথবদ্ধতা অনেক অনেক দৃঢ় ও রক সলিড হওয়ার কথা। মুক্তিযুদ্ধের সময় কিন্তু তাই আমরা দেখিয়েছি। সমাজে স্থিতিশীলতা, শান্তি নিশ্চিত করা ও হানাহানি, ভাইয়ে ভাইয়ে রেষারেষি বন্ধ করা জাতীয় নিরাপত্তার অন্যতম অনুষঙ্গ। কারণ এসবই সামাজিক যুথবদ্ধতা নিশ্চিত করে। সবাইকে নিয়েই সমাজ ও রাষ্ট্র। রাজনৈতিক মতবিরোধ ও আদর্শগত বিরোধিতা থাকবেই। কিন্তু যদি একটি রাষ্ট্রে একদল মানুষকে শুধু দৌড়ের ওপর রাখা হয়, গুম করা হয়, চাকরি-ব্যবসায় থেকে বঞ্চিত করা হয় শুধু রাজনৈতিক আদর্শে বিরোধী শিবিরে অবস্থানের কারণে; তা হলে সেই দেশে আজ হোক কাল হোক জাতীয় নিরাপত্তা ভেঙে পড়বেই পড়বে। সেখানে কোনো সেতুতে পিলার বা স্প্যানে ধাক্কা লাগার প্রয়োজন হবে না। একদল মানুষকে শত্রু বানিয়ে, তাদের পরিবারকে চোখের পানিতে রেখে জাতীয় ঐক্য ও জাতীয় নিরাপত্তার স্বপ্ন কেবল হাদাগঙ্গারামরাই দেখতে পারে। যদি তাই না হতো তা হলে ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়ার মতো উন্নয়নের জোয়ারে ভাসা দেশগুলোর আজ এ অবস্থা হতো না, পাকিস্তানও ১৯৭১ সালে ভেঙে যেত না। যখন কোনো মানুষ ভাবতে শুরু করে যে, রাষ্ট্র তার শত্রু বা রাষ্ট্র তার প্রতি অন্যায় করেছে; তখন সেই মানুষ আর কখনোই রাষ্ট্রকে ভালোবাসতে পারে না। তখন হয়তো একসময় সে প্রকৃত শত্রæতেই পরিণত হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে করিৎকর্মা গোয়েন্দা কর্তাদের বিশ্লেষণ কোনো কাজ করে না। ইতিহাস তার সাক্ষী। বার্লিন দেয়াল ভেঙে পড়ার পর পূর্ব জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা চেকার ফাইলগুলো তারই সাক্ষ্য দেয়।

আমি যদি ভাবতেই না পারি যে, এ দেশটি আমার যত্ন নেয়, এ দেশটি আমাকে যোগ্যতানুযায়ী চাকরি বা ব্যবসায় করার অধিকার দেয়, মতপ্রকাশের সুযোগ দেয়; তা হলে কিভাবে একটি দেশ আশা করতে পারে যে, তার জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কয়েকজন মাত্র আমলা দিয়ে? আজ চাকরি নিতে যান- নিরাপত্তা ছাড়পত্র! অর্থাৎ চাকরিপ্রার্থীর খালাতো ভাইয়ের স্ত্রীর পোষা বিড়ালটার যে বন্ধু আছে পাশের বাড়ির মিনি বিড়াল সে কোন রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী তা আগে দেখা হবে এবং সে অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত দেবে সংশ্লিষ্ট সংস্থা! ব্যবসায় করতে চান? আপনার পরিচয়? হান্ড্রেড পারসেন্ট জো হুকুম তো? তবেই মিলবে মোক্ষ! তা হলে বাকিরা কী করবে? বাকিরা চলবে কিভাবে? আবার তাদের গুমও করা হবে, খুনও করা হবে? এভাবে চান জাতীয় নিরাপত্তা টিকে থাকুক? শুধু অবকাঠামোটাই জাতীয় নিরাপত্তা? মানুষগুলোর নিরাপত্তা জাতীয় নিরাপত্তা নয়?

যে দেশে গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকে সেখানে কোনো সেতুর পিলারে ফেরি ধাক্কা দেয় না। সেখানে কোথাকার কোনো পাগল ঘোরাফেরা করে না। ‘র’ বা আইএসআই যাই বলি না কেন, তারা এত ছাগল এখনো হয়ে যায়নি যে, সেতু এলাকায় মোতায়েনকৃত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সামনে উশকোখুশকো কতগুলো পাগল ছেড়ে দেবে। ছাড়লেও এসব ট্যাকটিক্যাল ইনটেলিজেন্স। সেই ব্রিটিশ আমলের প্রশিক্ষণ অনুযায়ী মুচি সেজে, বাদামওয়ালা হয়ে তথ্য আদায়ের মতো বাহাদুর গোয়েন্দাগিরি। তাই তো কলকাতার এসবি রিপোর্ট দিয়েছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান! কারণ কবিগুরুর যে লম্বা দাড়ি আছে, তিনি লম্বা জোব্বাও পরতেন! আমাদের অবস্থা কি তার চেয়ে খুব একটা এগিয়েছে? না। হাহাকারের দীর্ঘশ্বাস ও অভিশাপে কখনো জাতীয় নিরাপত্তা সংহত হয় না, ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মূল উপসম্পাদকিয়-টি দৈনিক নয়াদিগন্ত-এর ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ প্রকাশ করা হয়েছিল।

মূল লিঙ্কঃ জাতীয় নিরাপত্তায় প্রাধিকার কোনটি : মানুষ না সেতু

Abu Rushd, Editor in Chief, Bangladesh Defence Journal
Editor in Chief at Bangladesh Defence Journal | Website |  + posts

Abu Rushd, the President of the Institute of Strategy and Tactics Research (ISTR), is a towering figure whose unparalleled experience spans military service, defense journalism, and global intelligence analysis. A former military officer turned investigative journalist, Abu Rushd brings over three decades of expertise in national security, international relations, and defense intelligence, making him an authoritative voice in shaping strategic discourse on global security challenges.

As a pioneer of defense journalism in Bangladesh, Abu Rushd has continuously pushed the boundaries of investigative reporting. He introduced defense and intelligence coverage into Bangladeshi media and established the Bangladesh Defence Journal, the country’s only publication dedicated to these critical issues. His in-depth understanding of intelligence agencies, military operations, and insurgency conflicts is reflected in his eight widely acclaimed books, with works cataloged in prestigious institutions like the University of Chicago, Yale University, and the University of Toronto.

Rushd's fearless journalism has taken him from the conflict zones of Sierra Leone to the reconstruction efforts in South Sudan. He has served as an official media partner at global defense expos, providing high-level analysis and insights into international security operations. His work on intelligence agencies, including his influential book on Indian espionage RAW in Bangladesh, stands as a testament to his commitment to uncovering hidden geopolitical forces.

As the President of ISTR, Lt. Abu Rushd's leadership reflects a rare combination of military precision, investigative rigor, and intellectual boldness. His visionary approach is essential for advancing strategic research that influences policy and shapes the future of global security.

Popular

Latest